- প্রবাসের কলাম
- বি এন পি ছাড়া জামাত-মুসলিম লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় কোন ফল বয়ে আনবে না !!
বি এন পি ছাড়া জামাত-মুসলিম লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় কোন ফল বয়ে আনবে না !!
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৫৭:৪৩,অপরাহ্ন ৩১ আগস্ট ২০১৭ | সংবাদটি ৪০৩ বার পঠিত
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো ছাড়া পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে ই দ্বিদলীয় রাজনীতি বিদ্যমান । দু একটি ব্যতিক্রম আছে রাজতন্ত্র ও সামরিক স্বৈরতন্ত্রের ক্ষেত্রে ।
কিছু দোষত্রুটি থাকলে ও বর্তমান বিশ্বে একমাত্র টিকে যাওয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা । প্রশ্ন হচ্ছে উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মত আমাদের মত দেশগুলোর গণতান্ত্রিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক চরিত্র কতটুকু ! একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কতগুলো পূর্বশর্ত থাকে , এর মাঝে প্রথমেই আসবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার ও সংবিধান বিরোধী কোন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়া ।
নির্বাচন কমিশনের বিঁধিমালার পূর্বশর্ত যাই থাকুক না কেন আমাদের দেশের কোন রাজনৈতিক দল ই যে সত্যিকার গণতান্ত্রিক নিয়ম নীতি অনুসরণ করে না এটি সর্বজন বিদিত । তবু কতগুলো মৌলিক বিষয় সবাইকে অনুসরণ করতে হবে আর এর প্রথম শর্ত হল দেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি রাজনীতি করতে না পারা । পৃথিবীর একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা এবং এই দেশের স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করছে এবং পূর্বের নামেই করছে ।
জামাত , মুসলিম লীগ , সহ অপরাপর দলগুলি যেমন তাদের পূর্বের নামে রাজনীতি করছে তেমনি বি এন পি র মত রাজনৈতিক দল একদিকে এদের সাথে জোটবেঁধে রাজনীতি করছে অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের পরিবারপরিজন নিয়ে রাজনীতি করে প্রকাশ্যেই দেশের মুলচেতনাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে ।
অন্যদিকে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যাকরে দেশ যে মুলত স্বাধীনতা বিরোধী চেতনায় ফিরে যায় তা আমরা দেখি হত্যার পরদিন ই আমাদের যুদ্ধের প্রতিপক্ষ দেশ এবং শক্তিগুলোর স্বীকৃতি এবং হত্যার দিন ই দেশের নাম পরিবর্তন করে ইসলামিক রিপাবলিক এ চলে যাওয়া এবং সকল কিছুর নাম পরিবর্তন করে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়া নেওয়া ।
এখন যে কথাটি বলতে চাচ্ছি তা হল জামাত বি এন পি যেমন আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দল তেমনি বি এন পি এদের আশ্রয়দাতা দল হিসাবে একই চেতনা এবং মূল্যবোধকে ধারন করে থাকে এই জিনিসটা পরিষ্কার । তাহলে এদেরকে আলাদা করার কোন উপায় নেই ।
এখন কথা হচ্ছে আমাদের দেশের সকল সুধিসমাজ জামাত , মুসলিমলিগের মত স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান কিন্তু কোন অদৃশ্য কারনে এদের সবার মুল আশ্রয়স্থল বি এন পি র ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকেন । অথচ ৭৫ এর পর আমরা যে রাজনৈতিক ভাবধারায় ফিরে গেলাম এর মুল অনুঘটক হচ্ছেন বি এন পির প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে ও বি এন পি হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী দল এবং ব্যক্তিবর্গের আশ্রয়দাতা এবং ১৫ আগস্টের দায় দায়িত্ব যারা স্বেচ্ছায় নিয়েছিল তাদেরকে রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে পুনর্বাসনের কাজ করে ১৫ আগস্টের দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া দল ।
এখন কথা হচ্ছে যারা জামাত মুসলিম লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান কিন্তু বি এন পি র ব্যাপারে নিশ্চুপ তারা কি মূলত স্বাধীনতাবিরোধী সকল শক্তিকে একত্রিত করে বি এন পির ছায়াতলে চান এটিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য নাকি কোন সত্যিকার দেশপ্রেম থেকে এ দাবি করে থাকেন ??
যদি সত্যিকার দেশপ্রেম থেকে এ দাবি করে থাকেন ! যদি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মূলোৎপাটন চান তাহলে বি এন পি কে নিষিদ্ধ করার কোন বিকল্প নেই ।
জার্মানে যদি এখনো হিটলারের রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি করতে দেওয়া হয় তাহলে তারা বর্তমানের যেকোনো দল থেকে বেশি জনসমর্থন পাবে বলে অনেকে মনে করে থাকেন । তাই বলে গণতন্ত্রের কথা বলে কেউ জার্মানে নাজিদের রাজনীতি করার অধিকারের দাবিকে মেনে নিবে না ।
তাই গণতন্ত্রের মুল কথা স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের শত্রুদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাখতে হবে । আমার মনে হয় আমাদের দেশে স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের শত্রু কারা এটা আর নতুন করে বলার দরকার নাই ।
৭১ এবং ৭৫ এর খুনিরা যে একই শক্তি তা তো তাদের গৃহীত নীতিমালা থেকে ই পরিস্কার এবং এখনো এদের রাজনীতি এবং আস্রয় প্রশ্রয় এর জায়গা যে এক রাজনৈতিক বোদ্ধাদের এটা না বুঝার কোন কারন দেখি না !
আমাদের দেশের আরেকটি স্বাধীনতার পক্ষের দল যদি ক্ষমতার কেদ্রে নিজেদেরে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে তাহলে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা যেমন গড়ে উঠবে না তেমনি স্বাধীনতা বিরোধীদের এই হুমকিটা থেকেই যাচ্ছে । এদেরকে নিষিদ্ধ করা ছাড়া একটি কার্যকর স্বাধীনতার পক্ষের বিরোধী দল ও পাচ্ছিনা ।
আমরা দিন শেষে চাই শান্তিতে ঘুমাবো ,ভোট যাকেই দিবো ক্ষমতায় যে ই আসবে আমার স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের বিরোধী কেউ এর আশে পাশে নেই ।
লেখক : সাবেক ছাত্রনেতা , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।