ওয়াজ ! শীতের দিনের ওয়াজ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:১১:১৯,অপরাহ্ন ১০ জানুয়ারি ২০১৮ | সংবাদটি ৮৮৮ বার পঠিত
আমাদের এলাকায় সেই ছেলেবেলা থেকে দেখতেছি ওয়াজ হচ্ছে . আমার উপজেলা কানাইঘাটে আমার মনে হয় বাংলদেশের অন্যান্য উপজেলা থেকে বেশি মাদ্রাসা আছে, সেহেতু প্রতিটি মাদ্রাসা বছরে দুইবার জলছা করেন . জলছাতে একজন মানুষ যেতে বলেন আমি অমুক মাদ্রাসার ওয়াজে যাচ্ছি . শুধু মাদ্রাসার ওয়াজ হয় তাই নয় ,প্রতিটি গ্রামের মসজিদের ওয়াজ হয় প্রতি বছর . তাই সারা বছর আমাদের এলাকায় শুধু ওয়াজ আর ওয়াজ .
বাস্তবিকে ওয়াজে গিয়ে আমরা বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য শুনি . আমরা বলি এখন ওয়াজ করতেছেন মাওলানা অমুক . এই ওয়াজ একটি আরবি শব্দ যার অর্থ হল নসীহা দেওয়া . অর্থাৎ ওয়াজে গিয়ে আপনি নসীহা
শুনবেন কোন স্কলারের কাছ থেকে . আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পবিত্র কোরআনে এই কথা বলেছেন মাওইজা শব্দ দিয়ে . নসীহা কিভাবে দিতে হবে সেই ব্যাপারে আয়াত নাজিল করেছেন .
আল্লাহ বলেছেন :
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ
“হে নবী! প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং সদুপদেশ সহকারে তোমার রবের পথের দিকে দাওয়াত দাও.”
“Call to the way of your Lord with wisdom and goodly exhortation”
আমার প্রশ্ন এত ওয়াজ এত নসীহা শুনার পর আমরা কি ধর্মের দিকে আগাচ্ছি ? ধর্মের দিকে আগানু অর্থ ধর্মীয় জ্ঞান বাড়ানো ও পরহেজগারি করা , ইসলাম কে নিজের জীবনে , সমাজে বাস্তবায়িত করা ,নিজেকে সেইভ করা ভয়াবহ জাহান্নাম থেকে .
ইদানীং শুরু হয়েছে আরেক তামাশা , চার বছরের বাচ্ছা দিয়ে ওয়াজ করানো হচ্ছে . আমার এলাকা গাছবাড়িতে হাজার যাহার আলিম আছেন , নসীহা দেওয়ার মত স্কলার আছেন তার পরও আমাদের এলাকায়ই দেখলাম এই শিশুটি ওয়াজ!!! করতেছে . একটি চার বছরের ছেলের কি জ্ঞান থাকতে পারে , কি হেকমত থাকতে পারে?
আমার কাছে এই ওয়াজ এখন একটি ফ্যাশন মনে হয় . চল চল ওয়াজে যাই , ওয়াজে গেলাম , বন্ধুরা একত্রিত হলাম , বাড়িতে মেহমান আসলেন , ভালমন্দ খাওয়া হল , ওয়াজের ওসিলায় বাজার বসল, মিটাই খেলাম , গল্প করলাম অমুক মাওলানার ওয়াজ খুবই সুন্দর তারপর কিছুই নাই .
আমি ওয়াজের বিরোধিতা করতেছিনা . আপনারা ওয়াজ করান , ওয়াজেও যান , আপনাদের রিমাইন্ড হবে কিন্তু আপনাদের নিজেকে অবশ্যই বুজতে হবে , আইডেন্টিফাই করতে হবে ইসলাম কি ? রাসূলের মেসেজ কি ? কি করলে আপনি না বুজেও শিরিক করে ফেলবেন , কবিরা গুনা কি , সগীরা কি , কি করলে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারবেন ,
মোটামুটি একটি পরিষ্কার ধারণার জ্ঞান শিখেন তার পর সময়ে সময়ে ওয়াজে গিয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি করুন .
পৃথিবীর শ্রেষ্ট ওয়াজ হল আল্লাহর ওয়াজ, অর্থাৎ কোরআন . আপনি এই কোরআন কে স্টাডি করুন , নিজে নিজেকে নসীহা দিন , হিসাব মিলান নিজে নিজের
আমল পরিবর্তন করুন , ওয়াজে গিয়ে সামান্য হলে ও নিয়ে আসুন , নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করুন , অন্যকে অনুপ্রাণিত করুন , তবেই হবে এই ওয়াজের সার্থকথা নতুবা সেই যেই থেকে যাবে . লেখক : লন্ডন প্রবাসী কমিউনিটি একটিভিিিষ্ট।