মাদকের ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসের হুঁশিয়ারি
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১৭:৪৫,অপরাহ্ন ২৯ মে ২০১৮ | সংবাদটি ১৮৭৯ বার পঠিত
ইসলামে মাদক হারাম। যে কোনো মাদকবস্তু কেনা-বেচা এবং সেবনও হারাম। মদ সেবনের দ্বারা মানুষের বিবেক ঠিক থাকে না। তখন তার দ্বারা যে কোনো অপরাধ সংগঠিত হতে পারে। তাই মাদকের ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে এসেছে নানা হুঁশিয়ারি।
পবিত্র কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা, লটারী এসবই শয়তানের অপবিত্র কাজ। তোমরা উহা হতে বিরত থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সাফল্য লাভ করতে পারবে’। (সূরা মায়িদা- ৯০)
অন্যত্র আল্লাহপাক তাদের অভিসম্পাত দিয়েছেন, যারা মদ পান করে, যারা অন্যকে পান করায়, যারা বিক্রি করে, যারা ক্রয় করে, যারা তা নিংড়ায়, যারা উৎপাদন করে, যারা বহন করে এবং যাদের নিকটে বহন করা হয়- এটাই হাদীসের ভাষ্য।
কুরআন মাজিদের আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্ধেষের সৃষ্টি করতে চায় এবং আল্লাহর জিকির ও নামাজ হতে তোমাদের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকে। তাই তোমরা এসব জিনিস হতে বিরত থাকবে। (সূরা মায়িদা-৯১)
আরেক জায়গায় বলা হযেছে, ‘(হে নবি!) তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলে দিন, উভয়ের মধ্যেই নিহিত রয়েছে মহাপাপ। যদিও উহাতে মানুষের জন্যে কিছুটা উপকারিতাও রয়েছে। এগুলোর পাপ উপকারের চেয়ে অনেক বড়।’ (সূরা বাকারা-২১৯)
এসব আয়াতের মাধ্যমে বুঝে আসে মদ সেবনের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। মদ বিক্রি করে দুনিয়ায় কিছু সামান্য উপকার পাওয়া যায়; যেটা হালাল নয়। মদ সেবনের দ্বারা সামান্য উপকারিতা থাকলে ৯৯% এর ক্ষতি থাকায় মদ হারাম।
বুখারি শরীফের এক হাদীসে যা হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) থেকে আনাস শুনেছেন, ‘কিয়ামতের আলামতের মধ্যে অজ্ঞতা ও মূর্খতা বেড়ে যাবে, ইলম হ্রাস পাবে, যেনা-ব্যভিচার প্রকাশ্য হতে থাকবে (যা আজ অহরহ হয়ে চলছে), অবাধে মদপান চলবে, পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাবে, নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এমনকি অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছাবে যে, পঞ্চাশজন নারীর পরিচালক হবে মাত্র একজন পুরুষ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, মদ্যপায়ী অসুস্থ হলে তাকে দেখতে ও সেবা করতে যেও না। মোটকথা, ইসলাম নেশাজাতীয় সব ধরণের দ্রব্যকে হারাম ঘোষণা করেছে। এমনকি ইসলামের প্রাথমিক যুগে মাদকসেবনকারীকে শাস্তিস্বরূপ ৪০ দোররা দেয়া হতো। হযরত ওমর (রাঃ)-এর সময় ৮০ দোররা দেয়া হতো!
বর্তমান বাংলাদেশে মাদকের বিষয়ে আইন আছে এবং শাস্তির বিধান রয়েছে। এখন প্রয়োজন যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ করা এবং মাদকের করালগ্রাস থেকে পরিবার, সমাজ এবং দেশকে হেফাজত করা।