করোনা জয় ও ইদের আনন্দে মুখরিত ওরলান্ডো প্রবাসাীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৯:০৪,অপরাহ্ন ১৬ মে ২০২২ | সংবাদটি ১০৬ বার পঠিত
জুয়েল সাদত
সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার নবীন সংগঠন বাংলাদেশ সমিতির দ্বিতীয় মেয়াদের কমিটির অভিষেক ও ইদ গেটটুগেদার এ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় গত শনিবার ১৪ মে ছিল উপছে পড়া ভীড়।
ওরলান্ডোর আপনা ইভেন্ট সেন্টার এর লেগেসি ভেনুতে ফুটে উঠেছিল পুরো বাংলাদেশ। নানা জেলার নানা উপজেলার প্রবাসীরা একটি অন্যরকম সন্ধ্যা উপভোগ্ করলেন। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার ইতিহাস এত ব্যাপক জনসমাগম হয়নি। সাড়ে সাতশত প্রবাসীর উপস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খান সমিতির নেতৃবৃন্দের।
তিন পর্বে অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত দেড়টা অবধি ছিলেন।
বাংলাদেশের লিজেন্ড দুজন শিল্পী কনকঁচাপা ও তাহসান ছিলেন মুল শিল্পী দুই প্রজন্মের শিল্পীর গান শুনতে শত শত মাইল ড্রাইভ করে শত শত প্রবাসীরা আসেন।
প্রথমে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত দিয়ে মুল অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রতিষ্টাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাহেদ আলম এর উপস্থাপননায়। তারপর কোরআন তেলায়াত করেন মেহেদী বাবুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির প্রতিষ্টাতাকালীন ও ২০২২-২০২৪ এর সভাপতি জনাব নুরুল ইসলাম ও ২০২২- ২০২৪ এর নির্বাহী সভাপতি সামস ইউ আহমেদ শোভন, ইভেন্ট চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধা শামীম মৃধা । দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল আাহমদ। আনোয়ার হোসেন সেন্টু নতুন কমিটির সকল সদস্য দের পরিচয় করিয়ে দেন, তাকে সাহায্য করেন নাজিম উল্লাহ লিটন। ১১০ সদস্যদের মঞ্চে ডেকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, শপথ পাঠ করান জনাব এ কে এম হোসেন হিটু। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য নুরেন হায়দার, ও ফ্লোরিডা স্টেটের স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ ডেইজি মোরালিজ ও সাংবাদিক জুয়েল সাদত।
বাংলাদেশ সমিতির অন্যতম প্রতিষ্টাতা সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন সেন্টু তার শুভেচ্ছা বক্তব্য সেন্ট্রাল ফ্লোরিডাবাসীকে ধন্যবাদ জানান নতুন সংগঠন” বাংলাদেশ সমিতির” সকল ইভেন্টে উপস্থিত থাকার জন্য। তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা বাংলাদেশ সমিতির মাধ্যমে প্রবাসীদের সকল সুখে দুঃখে পাশে থাকব। যে কোন প্রয়োজনে আমাদের সদস্যদের পাশে পাবেন।
বাংলাদেশ সমিতির অভিষেকের অন্যতম স্পন্সর আটলান্টার বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব নাহিনুর রহমান মুন্নাকে পরিচয় করিয়ে দেন আনোয়ার হোসেন সেন্টু ও নাজিম উল্লাহ লিটন। নাহিন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ওরলান্ডো বাসীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ইদের এই আনন্দে সকলের সাথে থাকতেন পেরে আমি ধন্য মনে করছি। নাহিন বলেন, আপনাদের যে কোন প্রয়োজনে ইনশাআল্লাহ আমাকে পাবেন।
বাংলাদেশ সমিতির অভিষেক উপলক্ষে লিগেসি ইভেন্ট সেন্টার কে বাংলাদেশের আদলে সাজানো হয়। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে আপনা প্লাজার বিশাল চত্বর। আপনা প্লাজা ও নিকটস্থ সেমস ক্লাবের বিশাল পার্কিং জায়গা সংকুলান না হওয়াতে অনেকেই ফিরে যান।
অভিষেক উপলক্ষে হেলাল আহমদ ও সামস ইউ শোভনের সম্পাদনায় একটি চমৎকার ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়।
তৃতীয় পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন মৌসুমি। রাত সাড়ে নয়টায় মঞ্চে আাসেন আটলান্টার প্রতিভাবান শিল্পী নওশিন। এ প্রজন্মের শিল্পী নওশিন চমৎকার করে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান পরিবেশন করে। নওশিন পুটো ৪৫ মিনিট জমিয়ে রাখেন৷ দশটার দিকে খাবার পরিবেশন করা হয়, পুরুষ ও মহিলাদের ফ্রী খাবার পরিবেশন করেন বাংলাদেশ সমিতির নেতৃবৃন্দ। ফুড কমিটির চেয়রাম্যানের ইসহাক আলী তার পুরো টীম নিয়ে খুবই সুশৃঙ্খল ভাবে সকল উপস্থিত প্রবাসীদের খাবার পরিবেশন করেন। রাত ১১ টায় মঞ্চে আসন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী কনকচাঁপা। কনকচাঁপা আশির দশক ও নব্বই দশকের জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন।
কনকচাঁপার গান গুলো চলাকালীন পুরো অডিয়েন্স নিশ্চুপ হয়ে যায়। কনকচাঁপা বারবার এরকম চমৎকার অডিয়ন্স দেখে ধন্যবাদ জানান। রাত সোয়া বারোটা গান চলতেই থাকে। এর পর মঞ্চে আাসেন তাহসান, তাহসানকে দেখার জন্য বিকাল ৫ টা থেকে অনেকে বসে ছিলেন। তাহসান কে অনেকটা এসকট করে নিয়ে আসা হয়, তাহসান এর সাথে ছবি তুলার জন্য প্রচন্ড ভীড় ছিল। তাহসানের গান শুরুর আগে কয়েকজনকে সম্মাননা জানানো জানানো হয়। তারা হলেন কূদরত আলী, এ কে এম হোসেন হিটু, জাহেদ আলম ও সেতু।
রাত সাড়ে ১২ টায় তাহসান গান শুরু করেন, একে একে তার জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করেন। তখনও পুরো হল ছিল লোকে লোকারণ্য। তাহসান অসাধারণ এই অডিয়েন্স দেখে মুগ্ধ হয়ে বার বার ধন্যবাদ দিতে থাকেন। তখন পুরো হল জুড়ে নতুন প্রজন্ম। তাহসান এর গান পরিবেশন করেন, কখনও পিয়ানো বাজিয়ে কখনও নেচে গেয়ে। একাধারে এক ঘন্টা চলতে থাকে তাহসান এর গান। তাহসান জ্বরে ভুগছিল পুরো শহর৷ তাহসান সকলকে মুগ্ধ করেই তার পরিবেশনা করেন৷ তার নিজস্ব ষ্টাইলে তিনি জনিয়ে রাখেন।
মায়ামী, টেম্পা,সেন্টপিট,লিজবারগ, বোকারটন নানা শহরের প্রবাসীরা ২/৩ ঘন্টা ড্রাইভ করে এসেছিলেন। রাত দেড়টা পর্যন্ত চলে তাহাসানের গান। ওরলান্ডোর সবচেয়ে সফল একটি ইভেন্ট বাংলাদেশ সমিতিকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে। অনেকেই বাংলাদেশ সমিতিকে ফেবানা আয়োজনের আহবান জানান৷ বাংলাদেশ সমিতি তাদের তিনবছরের সময়কালে নানা মানবিক কাজে সকলের দৃষ্টিতে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সকল প্রবাসীদের খাবার পরিবেশেন করে উপদেষ্টা তাহের মিয়া আহমেদ রেষ্টুরেন্ট।
রাত দেড়টায় বাংলাদেশ সমিতির অনুষ্টানের সমাপ্তি ঘটে।। তাহসানের সাথে ছবি তুলার প্রতিযোগীতা চলতেই থাকে। বাংলাদেশ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহেদ আলম ও নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমদ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপ্তি টানেন। পুরো অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে জড়িত ছিলেন জাহাঙ্গীর সরদার, আব্দুল জলিল, কাজী আসিফ ইকবাল সুকন, জুয়েল সাদত, মিজান মোস্তফা সবুজ,সাইদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান সামসু,মুরাদ হোসেন,ইসহাক আলী, জাহাঙ্গীর খান,স্বপন অধিকারী,মেহেদী বাবুল,আলী মিয়া,জলি আহমদ,মোহাম্মদ সফি, জালাল আহমদ, মুরসালাত সহ সমিতির নতুন কমিটির সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ফ্লোরিডার বাংলাদেশ ক্লাব,ঢাকা ক্লাব, ওরলান্ডোর আনন্দধারা, জালালাবাদ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সোসাইটি, ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগ ও সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা।